চলমান জ্বালানি সংকটের মধ্যে সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কিছু কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, সারা দেশে বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রয়েছে; যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি আরও বাড়ছে।
জেলার পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষ জেলার বাসিন্দাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এমন ব্যাপক লোডশেডিংয়ের জন্য কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি শীর্ষস্থানীয় কারণ বলে মনে করছে তারা।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার তথ্যমতে, পৌরসভায় নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা দুই হাজার ৪০০ হলেও বাস্তবে এ ধরনের প্রায় চার হাজার রিকশা রাস্তায় চলাচল করছে।
এতে বলা হয়েছে, এই যানবাহনগুলো প্রতিদিন গড়ে ৩৩ হাজার ইউনিট এবং প্রতি মাসে ৯লাখ ৯০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
এতে আরও বলা হয়, একটি পরিবার প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার মানে মোট তিন হাজার ৩০০ পরিবার এই পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে; যা ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চার্জার স্টেশনের মালিকরা জানান, রিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে তারা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা নেন। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশার চালককে দৈনিক ৩০০ টাকা দিতে হয় মালিককে।
তারা আরও জানান,‘একটি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত ব্যাটারি চালিত রিকশা ২০০ কিলোমিটার যেতে পারে। কখনও কখনও দীর্ঘ দূরত্ব চালানোর জন্য বিকালের মধ্যে চার্জ কমে যায়। ’
জেলার ইজিবাইক চালক মো. কালাম বলেন, এই ধরনের রিকশার একজন চালক প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, চার্জিং স্টেশনের জন্য আলাদা বিদ্যুতের দর রয়েছে। ‘ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ফ্ল্যাট রেট ৭ টাকা ৬৪ পয়সা, অফ পিক রেট ৬টাকা ৮৮ পয়সা এবং পিক রেট ৯ টাকা ৫৫ পয়সা।
মামুনুর বলেন, যারা ডবল ট্যারিফ মিটার ব্যবহার করেন তারা পিক এবং অফ পিক রেট অনুযায়ী তাদের বিল পরিশোধ করেন; আর যাদের একক ট্যারিফ মিটার, তারা ফ্ল্যাট রেট হারে তাদের বিল পরিশোধ করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকে প্রভাবিত করে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দৈনিক দুই ঘণ্টা লোডশেডিং এর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পরে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সংশোধিত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘এলাকা অনুযায়ী, আমরা সারা দেশে প্রতিদিন এক ঘণ্টার লোডশেডিং শুরু করব। প্রয়োজন হলে, সিদ্ধান্তটি এক সপ্তাহ পরে পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লোডশেডিং অধিকাংশ বিতরণ সংস্থার
সরকার রাত ৮ টার মধ্যে শপিং মল বন্ধ, এয়ার কুলারের সীমাবদ্ধ ব্যবহার সহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। এছাড়া অফিসের সময় সীমিত করার এবং সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনাও চলছে।